Menu

More

Monday, January 13, 2025
Light
Dark

বাংলাদেশের রফতানি আয় ১৪ বিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে দেখানোর নেপথ্যে

বাংলাদেশে রফতানির বাৎসরিক হিসেবে প্রকৃত পরিমাণের চেয়ে ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বেশি দেখানোর ঘটনা বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

রফতানির মতো গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর একটি খাতকে নিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভুল তথ্য প্রকাশের এমন ঘটনায় একই সঙ্গে বিস্ময় ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অর্থনীতিবিদরা।

মূলত একটি দেশের মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি থেকে শুরু করে অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক নির্ধারণ এবং অর্থনৈতিক নানান নীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়নে রফতানি আয়ের প্রকৃত হিসাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

কিন্তু রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দশ মাসের রফতানি আয়ের হিসেবে বড় ধরনের অসামাঞ্জস্য ধরা পড়েছে।

যে প্রভাব পড়তে পারে

বিশ্লেষকরা বলছেন, অনেক দিন ধরেই বিদেশি বিনিয়োগকারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্থা ও গবেষকেরা বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে সরকারি বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে আসছিলেন।

ফলে রফতানির তথ্যে গরমিলের যে ঘটনাটি এখন সামনে এসেছে, সেটি দেশের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারে।

“আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্যকে সাধারণত নির্ভরযোগ্য তথ্য হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। কিন্তু এই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতাই প্রশ্নের মুখে পড়ে গেছে, যা দেশের ভাবমূর্তির উপরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

একই সঙ্গে, রফতানির ক্ষেত্রে ভুল তথ্য প্রকাশের কারণে অর্থনীতির সূচকগুলোর গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নের মুখে পড়েছে বলেও মনে করেন তিনি।

“যেহেতু জিডিপি-সহ অর্থনীতির অনেকগুলো সূচক নির্ধারণে রফতানি আয়ের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়, কাজেই সেগুলো নিয়ে এখন প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়,” বিবিসি বাংলাকে বলেন অর্থনীতিবিদ মিজ খাতুন।

এমন অবস্থায় জিডিপি, জিএনপি, লেনদেনের ভারসাম্য, বিদেশি ঋণ গ্রহণের নীতি-সহ অর্থনীতির অনেক সূচক সংশোধন করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

“বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে বোঝা যাচ্ছে যে, এসব সূচকগুলো ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়েছিল। ফলে সেগুলো দিয়ে অর্থনীতির প্রকৃত চিত্র পাওয়া যাবে না,” বিবিসি বাংলাকে বলেন বাংলাদেশের পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধির হার প্রায় ৫.৮২ শতাংশ। এছাড়া মাথাপিছু আয় প্রায় দুই হাজার ৭৮৪ মার্কিন ডলার বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

“নতুন করে হিসেব করলে দেখা যাবে এগুলো কমে যাচ্ছে। ফলে উন্নয়নের চমকপ্রদ যে একটা গল্প, সেটা থেকে আমরা কিছুটা সরে আসবো,” বিবিসি বাংলাকে বলেন সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক মিজ খাতুন।

একসঙ্গে, অর্থনীতি বিষয়ক পরিকল্পনা এবং নীতিতেও পরিবর্তন আনতে হবে বলে জানাচ্ছেন তিনি।

অন্যদিকে, রফতানির ভুল তথ্য প্রকাশের কারণে বৈদেশিক বিনিয়োগ এবং রিজার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ।

“সরকারি তথ্য বা পরিসংখ্যানে বিশ্বাসযোগ্যতার ঘাটতি দেখা দিলে সেটি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করতে পারে। কারণ বিনিয়োগকারীরা অর্থ বিনিয়োগের আগে এসব তথ্য বিবেচনায় নেন,” বিবিসি বাংলাকে বলেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান।

আর সে কারণে কীভাবে তথ্যের গরমিলের ঘটনাটি ঘটল, সেটি খতিয়ে দেখা জরুরি বলেও মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

“কারা এটি করল? কেন করল? এটি নিছকই পদ্ধতিগত ভুল, নাকি তার চেয়ে বেশি কিছু? সেটা দেখা জরুরি,” বিবিসি বাংলাকে বলেন পিআরআইয়ের পরিচালক আহসান এইচ মনসুর।

“এর আড়ালে কেউ বাড়তি সুবিধা বা প্রণোদনা নিয়েছে কি না, বা টাকা পাচার করেছে কি না, সেটি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *